ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা । ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার প্রশ্ন - উত্তর

ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা । ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার প্রশ্ন - উত্তর

ইভিং লাইসেন্স করানোর জন্য বিআরটিএ’র নিয়ম মেনে আবেদন করলেন। আবেদনের পরই পাবেন শিক্ষানবিস ড্রাইভিং লাইসেন্স। এটি পাওয়ার পর অংশ নিতে হয় দুই তিন মাসের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে। প্রশিক্ষণ শেষ করার পর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সকল লাইসেন্স প্রত্যাশীদেরকেই নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্ট-এ অংশ গ্রহণ করতে হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্সের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আরটিভি অনলাইনের ধারাবাহিক আয়োজনের প্রথম পর্ব আজ।

প্রশ্নঃ মোটরযান কাকে বলে ?

উত্তরঃ মোটরযান আইনে মোটরযান অর্থ কোনো যন্ত্রচালিত যান, যার চালিকাশক্তি বাইরের বা ভেতরের কোনো উৎস হতে সরবরাহ হয়ে থাকে।

প্রশ্নঃ মোটরযানের মেইনটেনেন্স বা রক্ষণাবেক্ষণ বলতে কী বুঝায় ?

উত্তরঃ ত্রুটিমুক্ত অবস্থায় একটি গাড়ি হতে দীর্ঘদিন সার্ভিস পাওয়ার জন্য প্রতিদিন গাড়িতে যে সমস্ত মেরামত কাজ করা হয়, তাকে মোটরযানের মেইনটেনেন্স বলে।

প্রশ্নঃ গাড়ী চালানোর পূর্বে প্রতিদিন কী কী মেইনটেনেন্স করতে হয়?

উত্তরঃ গাড়ী চালানোর পূর্বে নানা ধরনের ব্যাপার পরীক্ষা করতে হয়। যেমন-

ক. গাড়ির হালনাগাদ বৈধ কাগজপত্র (রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ট্যাক্সটোকেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইনসিওরেন্স (বিমা) সার্টিফিকেট, রুট পারমিট ইত্যাদি) গাড়ির সঙ্গে রাখা।

খ. গাড়িতে জ্বালানি আছে কি না পরীক্ষা করা, না থাকলে পরিমাণ মতো নেওয়া।

গ. রেডিয়েটর ও ব্যাটারিতে পানি আছে কি না পরীক্ষা করা, না থাকলে পরিমাণ মতো নেওয়া।

ঘ. ব্যাটারি কানেকশন পরীক্ষা করা।

ঙ. লুব/ইঞ্জিন অয়েলের লেবেল ও ঘনত্ব পরীক্ষা করা, কম থাকলে পরিমাণ মতো নেওয়া।

চ. মাস্টার সিলিন্ডারের ব্রেকফ্লুইড, ব্রেকঅয়েল পরীক্ষা করা, কম থাকলে নেওয়া।

ছ. গাড়ির ইঞ্জিন, লাইটিং সিস্টেম, ব্যাটারি, স্টিয়ারিং ইত্যাদি সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, নাট-বোল্ট টাইট আছে কি না অর্থাৎ সার্বিকভাবে মোটরযানটি ত্রুটিমুক্ত আছে কি না পরীক্ষা করা।

জ. ব্রেক ও ক্লাচের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা।

ঝ. অগ্নিনির্বাপকযন্ত্র এবং ফাস্টএইড বক্স গাড়িতে রাখা।

প্রশ্ন: ট্রাফিক সাইন বা রোড সাইন (চিহ্ন) প্রধানত কত প্রকার ও কী কী ?

উত্তর: ট্রাফিক সাইন বা চিহ্ন প্রধানত তিন প্রকার। 

ক. বাধ্যতামূলক, যা প্রধানত বৃত্তাকৃতির হয়,

খ. সতর্কতামূলক, যা প্রধানত ত্রিভুজাকৃতির হয় এবং

গ. তথ্যমূলক, যা প্রধানত আয়তক্ষেত্রাকার হয়। 

প্রশ্ন: লাল বৃত্তাকার সাইন কী নির্দেশনা প্রদর্শন করে?

উত্তর: নিষেধ বা করা যাবে না বা অবশ্যবর্জনীয় নির্দেশনা প্রদর্শন করে।

প্রশ্ন: নীল বৃত্তাকার সাইন কী নির্দেশনা প্রদর্শন করে?

উত্তর: করতে হবে বা অবশ্যপালনীয় নির্দেশনা প্রদর্শন করে।

প্রশ্ন: লাল ত্রিভুজাকৃতির সাইন কী নিদের্শনা প্রদর্শন করে?

উত্তর: সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা প্রদর্শন করে।

প্রশ্ন: নীল রঙের আয়তক্ষেত্র কোন ধরনের সাইন?

উত্তর: সাধারণ তথ্যমূলক সাইন।

প্রশ্ন: সবুজ রঙের আয়তক্ষেত্র কোন ধরনের সাইন?

উত্তর: পথনির্দেশক তথ্যমূলক সাইন, যা জাতীয় মহাসড়কে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন: কালো বর্ডারের সাদা রঙের আয়তক্ষেত্র কোন ধরনের সাইন?

উত্তর: এটিও পথনির্দেশক তথ্যমূলক সাইন, যা মহাসড়ক ব্যতীত অন্যান্য সড়কে ব্যবহৃত হয়।

প্রশ্ন: ট্রাফিক সিগন্যাল বা সংকেত কত প্রকার ও কী কী?

উত্তর: ৩ (তিন) প্রকার। যেমন- ক. বাহুর সংকেত, খ. আলোর সংকেত ও গ. শব্দ সংকেত।

প্রশ্ন: ট্রাফিক লাইট সিগন্যালের চক্র বা অনুক্রমগুলি কী কী?

উত্তর: লাল-সবুজ-হলুদ এবং পুনরায় লাল।

প্রশ্ন: লাল, সবুজ ও হলুদ বাতি কী নির্দেশনা প্রদশন করে?

উত্তর: লালবাতি জ্বললে গাড়িকে ‘থামুন লাইন’ এর পেছনে থামিয়ে অপেক্ষা করতে হবে, সবুজবাতি জ্বললে গাড়ি নিয়ে অগ্রসর হওয়া যাবে এবং হলুদবাতি জ্বললে গাড়িকে থামানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

ঞ. গাড়ির বাইরের এবং ভেতরের বাতির অবস্থা, চাকা (টায়ার কন্ডিশন/ হাওয়া/ নাট/ এলাইমেন্ট/ রোটেশন/ স্পেয়ার চাকা) পরীক্ষা করা।

শ্ন: সার্ভিসিং বলতে কী বোঝায়?

উত্তর: মোটরযানের ইঞ্জিন ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশের কার্যক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর যে কাজগুলো করা হয়, তাকে সার্ভিসিং বলে।

প্রশ্ন: গাড়ি সার্ভিসিংয়ে কী কী কাজ করা হয়?

উত্তর:

ক. ইঞ্জিনের পুরান লুবঅয়েল (মবিল) ফেলে দিয়ে নতুন লুবঅয়েল দেওয়া। নতুন লুবঅয়েল দেওয়ার আগে ফ্লাশিং অয়েল দ্বারা ফ্লাশ করা।

খ. ইঞ্জিন ও রেডিয়েটরের পানি ড্রেন আউট করে ডিটারজেন্ট ও ফ্লাশিংগান দিয়ে পরিষ্কার করা, অতঃপর পরিষ্কার পানি দিয়ে পূর্ণ করা।

গ. ভারি মোটরযানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রিজিং পয়েন্টে গ্রিজগান দিয়ে নতুন গ্রিজ দেয়া।

ঘ. গাড়ির স্পেয়ার হুইলসহ প্রতিটি চাকাতে পরিমাণমতো হাওয়া দেয়া।

ঙ. লুবঅয়েল (মবিল) ফিল্টার, ফুয়েল ফিল্টার ও এয়ারক্লিনার পরিবর্তন করা।

প্রশ্ন: গাড়ি চালনাকালে কী কী কাগজপত্র গাড়ির সঙ্গে রাখতে হয়?

উত্তর:

ক. ড্রাইভিং লাইসেন্স

খ. রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (ব্লু-বুক)

গ. ট্যাক্সটোকেন

ঘ. ইনসিওরেন্স সার্টিফিকেট

ঙ.ফিটনেস সার্টিফিকেট (মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)

চ. রুট পারমিট (মোটরসাইকেল ও চালকব্যতীত সর্বোচ্চ ৭ আসন বিশিষ্ট ব্যক্তিগত যাত্রীবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)। 

প্রশ্ন: রাস্তায় গাড়ির কাগজপত্র কে কে চেক করতে পারেন/কোন কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে গাড়ির কাগজ দেখাতে আপনি বাধ্য?

উত্তর: সার্জেন্ট বা সাব-ইন্সপেক্টরের নিচে নয় এমন পুলিশ কর্মকর্তা, মোটরযান পরিদর্শকসহ বিআরটিএর কর্মকর্তা এবং মোবাইলকোর্টের কর্মকর্তা।

প্রশ্ন: মোটরসাইকেলে হেলমেট পরিধান ও আরোহী বহন সম্পর্কে আইন কী?

উত্তর: মোটরসাইকেলে চালক ব্যতীত ১ জন আরোহী বহন করা যাবে এবং উভয়কেই হেলমেট পরিধান করতে হবে (মোটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ধারা-১০০)।

শেয়ার করুনঃ

Whatsapp Pinterest